Wednesday, February 25, 2015
The main signs and symptoms of pregnancy গর্ভধারনের প্রধান লক্ষন ও উপসর্গসমূহ
গর্ভধারনের প্রধান লক্ষন ও উপসর্গসমূহ
গর্ভধারণ সব মেয়েদের কাছেই অতি কাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। একজন নারী প্রথম বারের জন্য যখন গর্ভধারণ করেন তার কাছে অনেক কিছুই থাকে অজানা। এই সামান্য অজানা তথ্যের জন্য অনেক সময় নানা ধরনের কুসংস্কার মায়ের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। আর একজন নারী গর্ভধারণ করেছেন কি না তা বুঝা যায় কিছু লক্ষণ
দেখে। অবশ্য প্রাথমিক পর্যায়ে একজন নারী গর্ভধারণ করলেও কোনো লক্ষণ নাও থাকতে পারে। গর্ভবতী হয়ে পড়লেও প্রথম কয়েক সপ্তাহ কিছু না-ও বুঝতে পারেন। একটু ক্লান্তি, একটু বমি বমি ভাব থাকতেও পারে আবার না-ও থাকতে পারে। আপনি হয়তো সেসব খেয়ালই করলেন না। প্রথম যে বিষয়টি আপনি লক্ষ্য করবেন তা হলো, সময় মাসিক না হওয়া। এটা গর্ভধারণের একটা নিশ্চিত লক্ষণ, তবে আরও অনেক কারণে মাসিক না হতে পারে। তাই মাসিক বন্ধ হলেই আপনি গর্ভবতী হয়েছেন তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কিন্তু গর্ভবতী হলে মাসিক বন্ধ হবেই। গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো হলোঃ
ঋতুস্রাব বন্ধ: যাদের নিয়মিত মাসিক হয় তাদের ক্ষেত্রে গর্ভধারনের সর্বপ্রথম চিহ্ন মাসিক বন্ধ হওয়া। মাঝে মধ্যে গর্ভবতী হলেও মাসিকের সময় সামান্য রক্তক্ষরণ হতে পারে। সবচেয়ে প্রচলিত ও তাৎপর্যপূর্ণ লক্ষণ হলো মাসিক বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া। তবে কোনো কোনো গর্ভবতী নারীর পিরিয়ড থাকতে পারে তবে তা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক হাল্কা মাত্রার ও কম সময়ের জন্য। কোনো নারীর যদি আগে থেকেই অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে তবে গর্ভধারণের এ লক্ষণটি তার ক্ষেত্রে একটু সমস্যার সৃষ্টি করবে। ঠিক কবে থেকে মাসিক বন্ধ হলো তা সনাক্তকরণ একটু কঠিনই হবে।
অসুস্থ বোধ করা: কোনো কোনো গর্ভবতী নারী সাময়িক ভাবে একটু অসুস্থ বা বমি বমি বোধ করে। এই বমনেচ্ছা কারো কারো ক্ষেত্রে কম হয় বা কারো ক্ষেত্রে খুব অস্বস্তিকর হতে পারে। একে ‘প্রাতঃকালীন অসুস্থতা’ বলে। তবে দিনের যে কোনো সময় এই বমনেচ্ছা প্রবল হতে পারে। এটাও হরমোনের তারতম্যজনিত কারণে হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত ক্লান্তিভাব এবং ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে।
খাবারের প্রতি অনীহা: আগে ভাল লাগত এমন খাবার বিস্বাদ লাগে আর নতুন নতুন খাবার খেতে ইচ্ছে করে। আবার অনেকের মুখে তামাটে স্বাদ লাগে।
স্তনের পরিবর্তন: গর্ভধারণ নিশ্চিত হওয়ার পর স্তনের আকারে পরিবর্তন আসা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে স্তনের বোঁটায় পরিবর্তন আসে। বোঁটা চেপে ধরলে এক ধরনের রস নিঃসৃত হতে দেখা যায়। এটাও এক ধরনের সংকেত গর্ভধারণের। ক্রমেই স্তনের আকার বড় হতে পারে এবং ব্যাথা হতে পারে (অনেকের মাসিকের সময়ও এমন হতে পারে), সুঁড়সুঁড়িও অনুভূত হতে পারে। রক্তনালী (রগ) গুলি আরো বেশি করে দেখা যেতে পারে এবং স্তনের বোঁটা আরো শক্ত এবং কালচে মনে হতে পারে।
প্রস্রাব: আরেকটি লক্ষণ হলো অপেক্ষাকৃত বেশিবার প্রস্রাব করা। এমনকি রাতে প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এটা মূলত হরমোনের মাত্রার তারতম্য এবং মূত্রথলির ওপর অত্যধিক চাপজনিত কারণে হয়ে থাকে। এছাড়াও তলপেট ভরা ভরা লাগতে পারে।
যৌনিপথ: কোনো কোনো গর্ভবতী নারী প্রথমবার সন্তান নেয়ার সময় একটু ক্লান্ত বা অবসন্নবোধ করে এবং অনেকের ক্ষেত্রেই যৌনি ক্ষরিত রসের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এমনকি যৌনি পথে কোনো প্রকার জ্বালা পোড়া ছাড়াই বেশি বেশি ক্ষরণ হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য: আরেকটি লক্ষণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। এটি হরমোনের মাত্রার তারতম্যের কারণেই হয় এবং বর্ধনশীল জরায়ু ক্রমাগতভাবেই পেটে চাপ দিতে থাকে। বেশি বা প্রচুর আঁশ জাতীয় খাবার যেমন- শুকনো আলুবোখরা, শিম, ছোলা, মটরশুটি ইত্যাদি এক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখে।
গর্ভবতী হবার অন্যান্য লক্ষন সমূহ, যেগুলো ৮ সপ্তাহের গর্ভবতী মহিলারা রিপোর্ট করেছেন তা হল -
১. উদরের স্ফিতি
২. কোষ্ঠকাঠিন্য
৩. বুক জ্বালাপোড়া
৪. নাক বন্ধ থাকা
৫. ছোট ছোট শ্বাস
৬. খাবারে অত্যাধিক রুচি অথবা অরুচি
৭. মানসিক পরিবর্তন
৮. মাথা ফাকা ফাকা লাগা
৯. শিরা উপশিরা গুলো দৃশ্যমান হওয়া
১০. হাতের তালু চুলকানো
১১. ত্বকের রঙের পরিবর্তন ( বিশেষ করে মুখমন্ডলের, পেটের, অথবা স্তনের নিপলের )
১২. যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যাওয়া
গর্ভকালীন সময়ে উপরের এই কারনগুলো নারীদের সবচেয়ে আলোচিত সমস্যা
প্রেগন্যান্সি টেস্ট
মাসিক বন্ধ হওয়ার দিন থেকেই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা যায়। টেস্ট পজিটিভ হলে আপনার গর্ভধারণের দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়েছে বুঝতে হবে। দিনের যেকোনো সময়ে এই টেস্ট করতে পারেন। প্রথমে একটি পরিষ্কার কন্টেইনারে (সাবান দিয়ে ধুয়ে থাকলে দেখুন সাবান লেগে আছে কি না) প্রস্রাব সংগ্রহ করুন। কাছের ফার্মেসি থেকে কিনে আনা স্ট্রিপ দিয়ে এবার দেখে নিন আপনি গর্ভবতী কি না। এসব স্ট্রিপের সুবিধা হল, এগুলো বাসায় বসে গোপনীয়তা বজায় রেখেই করা যায়।
ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই মোড়কের নির্দেশিকা পড়ে নেবেন। মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বা নির্দেশনা অনুসরণে ভুল হলে টেস্ট ভুল দেখাতে পারে। টেস্ট নেগেটিভ, কিন্তু আপনি নিজেকে সন্তানসম্ভবা বলে মনে করছেন, এমন হলে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করে দেখুন। এরপরও মনে হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। টেস্ট স্ট্রিপ ছাড়াও কাছাকাছি থাকা হাসপাতাল, প্রসূতি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আপনার প্রস্রাব পরীক্ষা করে গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে পারেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment